গরমে ত্বকের যত্নে নানা সমস্যা সমাধান
ঋতু ভেদে আমাদের ত্বকের টেক্সচার পরিবর্তন হয়ে থাকে। গরম ঋতুতে ত্বকের যত্ন না নিলে বিভিন্ন সমস্যা হয়ে থাকে। আর এই গরমে ত্বকের যত্নে নানা সমস্যা সমাধান নিয়ে আজকের আর্টিকেল।
আপনিও যদি গরমে ত্বকের যত্নে নানা সমস্যার সমাধান সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আর্টিকেলটি আপনার জন্য। তাই চলুন জেনে নিই গরমে ত্বকের যত্নে নানা সমস্যার সমাধান সম্পর্কে।
ভূমিকা
ঋতু ভেদে ত্বকের সমস্যাও পরিবর্তন হতে থাকে। শীতে যেমন ত্বক শুষ্ক ও রুক্ষ হয়, গরমে হয় তৈলাক্ত ও নির্জীব। গরমের সময়ে ত্বকে ঘাম ও অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ হয়। আর এরকম ত্বকে সহজে বাইরের ধুলো ময়লা জমে যায়। যার ফলে ত্বকে দেখা দেয় নানা রকম সমস্যা। তাই এই গরমে কিভাবে করবেন ত্বকের পরিচর্যা এ প্রসঙ্গে পরামর্শ দিয়েছেন রূপ বিশেষজ্ঞ শারমিন কোচি ।
আরও পড়ুনঃ গ্রীষ্ম ,বর্ষা ও শরতের চুলের পরিচর্যা কেমন হবে।
তিনি বলেন, এ সময়ে ত্বকের পরিচর্যার প্রথম শর্ত হচ্ছে সঠিকভাবে ত্বক পরিষ্কার করা। চলুন জেনে নিই ধাপে ধাপে ত্বক পরিচর্যার পদ্ধতি।
গরমে ত্বকের যত্নে ক্লিনজিং
এই দিনে বেশ কয়েকবার ঠান্ডা পানির ঝাপটা দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। আর ত্বক পরিষ্কার করতে প্রথমে তুলা বা টিস্যুর সঙ্গে ক্লিনজিং লোশন লাগিয়ে মুখটা মুছে নিন। এরপর হাতে খানিকটা স্ক্রাব নিয়ে পুরো মুখে লাগিয়ে আস্তে আস্তে সার্কুলেশন মুভমেন্ট এ ঘোষূণ। বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির স্ক্রাব পাওয়া যায়। সেগুলোর মান নিশ্চিত হয়ে আপনার পছন্দ মত কিনে নিতে পারেন।
অনেকে আবার বাজারে কেনা স্ক্রাব ব্যবহার করতে চান না। তারা চাইলে ঘরেই তৈরি করে নিতে পারেন স্ক্রাব। মসুর ডাল বাটার সঙ্গে গোলাপের পাপড়ি বাটা, তুলসী পাতা বাটা ও বাদাম গুড়া লোশন এর সঙ্গে মিশিয়ে মুখ ম্যাসাজ করুন। শুষ্ক ত্বকের জন্য এটা উপকারী স্ক্রাব। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য মসুর ডাল বাটা, নিমপাতা গুড়া, চন্দন গুড়া, কয়েক ফোঁটা লেবুর রস গোলাপ গোলাপ জল দিয়ে মিশিয়ে নিন।
আরও পড়ুনঃ চুলের ধরন বুঝে সঠিক নিয়মে চুলের পরিচর্যা।
এবার মুখে লাগিয়ে সার্কুলেশন মুভমেন্টে ম্যাসাজ করে তা ধুয়ে ফেলুন। আর ঘরে যদি এসব কিছু না থাকে তাহলে হাতে একটু চালের গুড়া নিয়ে পানি দিয়ে ভিজিয়ে তা দিয়েই মুখটা ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলুনএতেও মুখটা অনেক পরিষ্কার হবে। আর ঘুমাতে যাওয়ার আগে অবশ্যই সারাদিনে ত্বকে জমে থাকা ধুলো ময়লা পরিষ্কার করতে হবে।
এতে ত্বকে ব্রণ ও দাগ কম হবে। ত্বক পরিষ্কার করার পর স্বাভাবিক ও শুষ্ক ত্বকে সামান্য লোশন পানি মিশিয়ে লাগান। কিছুক্ষণ পর টিস্যু দিয়ে মুছে নিন।
টনিক ব্যাবহার করা
ত্বক পরিচর্যার দ্বিতীয় ধাপ হচ্ছে টনিক। গরমের এই সময়টাতে ত্বকটাকে স্নিগ্ধ ও সতেজ রাখতে টোনার অত্যন্ত কার্যকর। বাজারে বিভিন্ন ফুলের নির্যাস দিয়ে তৈরি টোনার পাওয়া যায়। সেগুলোই ব্যবহার করতে পারেন। তবে গোলাপ জল টোনার হিসেবে খুব ভালো কাজ করে। গোলাপ জল ফ্রিজে রেখে দেবেন।
বাইরে থেকে ফিরে মুখ পরিষ্কার করার পর তুলার সাহায্যে ঠান্ডা গোলাপ জল লাগান। যাদের ত্বক তৈলাক্ত তাদের জন্য এসট্রেন জেন্ট টোনার উপকারী এতে ত্বকের তৈলাক্ত ভাব কেটে যায়।
ত্বক ময়েশ্চারাইজিং করা
ময়েশ্চারাইজিং হচ্ছে ত্বক পরিচর্যার শেষ ধাপ। তবে তৈলাক্ত ত্বক মশ্চারাইজিং করার দরকার হয় না। যাদের ত্বক স্বাভাবিক ও শুষ্ক তারাই ত্বক পরিষ্কার করার পর ত্বকে ময়শ্চারাইজার লোশন ব্যবহার করতে পারেন। ক্রিম গরমে উপযোগী নয়। আর লোশনও খুব সামান্য পরিমাণ হাতে নিয়ে তাতে পানি মিশিয়ে তারপর লাগান।
কারণ গরমের সময় খুব বেশি ময়শ্চারাইজার ও ক্রিম ব্যবহার করলে তা লোম কূপের মুখ বন্ধ করে দিতে পারে।
গরমে ত্বকের নানা সমস্যা সমাধান
প্রচন্ড গরমে শুধু যে জনজীবন অতিষ্ঠ তাই নয়, এ সময়ে ত্বকে দেখা দেয় নানা রকম সমস্যা। যেমন রোদে পোড়া দাগ,ত্বক নির্জীব ও অনুজ্জ্বল হওয়া, চোখের নিচে কালি পরা, হাত পায়ের রুক্ষতা ইত্যাদি। নিয়মিত পরিচর্যা করলে এসব সমস্যা খানিকটা সমাধান করা সম্ভব। প্রচন্ড তাপ দাহে ত্বকের নানা সমস্যা সমাধানে কিভাবে পরিচর্যা করবেন পরামর্শ দিয়েছেন রূপ বিশেষজ্ঞ শারমিন কচি।
রোদে পোড়া সমস্যা ও সমাধান
কর্মব্যস্ত জীবনে নানা কাজে বাইরে বের হতে হয়। আর বাইরে বের হলে ত্বক কম বেশি রোদে পুড়বেই। যাদের একটু বেশি রোদে যেতে হয় তাদের ত্বকে পোড়া দাগ পড়ে যায়। এই দাগ তুলতে যা যা করবেন নিম্নে তা দেওয়া হলোঃ
- টক দই এর সঙ্গে সামান্য লেবু, শসা ও আলুর রস মিশিয়ে মুখে, হাতে, গলায় লাগান আধাঘন্টা পর গোসল করে ফেলুন।
- কাঁচা হলুদের সঙ্গে কমলালেবুর খোসা বাটা, পাকা পেঁপে, দুধের সর ও গোলাপজল মিশিয়ে মুখে, হাতে, গলায় লাগান শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন।
- আঙ্গুর, কমলালেবুর রস, নিম পাতা বাটা ও গোলাপজল মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। এই প্যাক পুরো ত্বকে লাগিয়ে রাখুন। নিয়মিত লাগালে রোদে পোড়া দাগ চলে যাবে। পাকা টমেটো চটকে মুখে লাগালেও রোদে পোড়া দাগ চলে যাবে।
চোখের নিচে কালি দূর করতে
চোখের নিচে নানা কারণে কালি পরে। তবে গরমের সময় যেন তা প্রকট হয়। চোখের নিচের কালি দূর করতে নিম্নে এর সমাধান দেওয়া হলঃ
- চায়ের লিকারের সঙ্গে শসা, আলু ও পাতিল লেবুর রস মিশিয়ে ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করুন। এরপর ওই প্যাকে তুলার প্যাড ভিজিয়ে চোখের ওপর বিছিয়ে চুপচাপ শুয়ে থাকুন। ২০ থেকে ২৫ মিনিট পর গোলাপ জল দিয়ে চোখটা মুছে ফেলুন। .
- মুলার রসে ও চোখের নিচের কালো দাগ দূর হয়। ঠান্ডা দুধের সঙ্গে মুলার রস মিশিয়ে তাতে তুলা ভিজিয়ে চোখের ওপর বিছিয়ে রাখুন। ২০ থেকে ২৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
- লিচু, কমলা, আপেল ও আলুর রস মিশিয়ে ফ্রিজে রেখে দিন। একইভাবে তুলো ভিজিয়ে চোখের ওপর রেখে ধুয়ে ফেলুন। দাগ চলে যাবে।
হাত পায়ের রুক্ষতা দূর করতে
- আটার রুটি ছোট ছোট টুকরো করে নিন। কাঁচা দুধে ঐ রুটি ভিজিয়ে তার সঙ্গে এক চা চামচ মধু, লেবুর রস, পাকা বেলের কাথ মিশিয়ে হাতে পায়ে লাগান। শুকিয়ে গেলে ভেজা হাতে ম্যাসাজ করে তুলে ঠান্ডা পানির ঝাপটা দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এরপর ময়েশ্চারাইজার লাগান।
- শশা ও আলুর রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে হাতে পায়ে লাগিয়ে একইভাবে রেখে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
- মুলতানি মাটি, মধু ও তরমুজের রস ডাবের পানির সঙ্গে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে হাত পায়ে লাগালে উপকার পাবেন।
- এছাড়া ও টক দইয়ের সঙ্গে চিনি, লবণ ও অলিভ অয়েল মিশিয়ে সারা শরীরে ম্যাসাজ করে 10 থেকে 15 মিনিট পর গোসল করে ফেলুন।
আরো জেনে রাখুনঃ
সুন্দর থাকতে হলে পুরো শরীরের যত্ন নেয়া জরুরী। আর কিছু বিষয় মেনে চলা উচিত। যেমন-- বাইরে যাওয়ার সময় শরীরের খোলা অংশে সানস্ক্রিন লাগাতে ভুলবেন না। সানস্ক্রিন বের হওয়ার অন্তত ১৫ মিনিট আগে লাগাবেন। বেশি তেল তেলে লাগলে টিস্যু দিয়ে চেপে চেপে মুছে পাউডার লাগান।
- গোসলের সময় ধারালো কিছু দিয়ে শরীর জোরে জোরে ঘষবেন না। লুফা দিয়ে হালকা হাতে ঘষুন।
গরমে ঠোঁটের যত্ন
গরমে অনেকেরই ধারণা, ঠোঁটের যত্ন শুধু শীতকালেই নিতে হয় এ কথা সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। কারণ অনেকের ঠোটের ত্বক শুষ্ক। সেক্ষেত্রে সারা বছরই তাদের ঠোঁটে মরা চামড়া ওঠে। এছাড়াও ঠোঁটে অন্য সমস্যা হতে পারে। তাই ঠোঁটের পরিচর্যা করতে হয় সব সময়ই। কেমন করে নেবেন ঠোঁটের যত্ন এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন রূপ বিশেষজ্ঞ কানিজ আলমাস খান।
তিনি বলেন, শীতে তো বটেই গরমেও অনেকের ঠোঁট ফাটে। এছাড়া বছরের যে কোন সময়েই ঠোঁট কালো হয়ে যেতে পারে। চলুন জেনে নিই কিভাবে করবেন ঠোঁটের পরিচর্যাঃ
- বাইরে থেকে ফিরে সব সময় টিস্যু দিয়ে ঠোঁটের লিপিস্টিক মুছে নিন। এরপরমুখ ধুয়ে ঠোটে হালকা করে পেট্রোলিয়াম জেলি লাগাবেন।
- অনেকেই ঠোঁট শুকিয়ে গেলে জিভ দিয়ে ভিজিয়ে নেন। এটা একদমই করবেন না। আর ঠোঁটের মরা চামড়া নখ দিয়ে খুটবেন না বা হাত দিয়ে টেনে তুলবেন না। রুমাল ভিজিয়ে আলতোভাবে ঘষে তুলুন।
- যাদের ঠোঁট কালো হয়ে গেছে তারা ঘুমাতে যাওয়ার আগে ঠোঁট পরিষ্কার করে গ্লিসারিনের সঙ্গে সামান্য লেবুর রস মিশিয়ে ঠোঁটে লাগান। সকালে উঠে ধুয়ে ফেলুন।
- গোলাপের পাপড়ি বাটা কাচা দুধের সঙ্গে মিশিয়ে ঠোটে লাগান। আধা আধঘন্টা রেখে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত করলে ঠোঁটের কালো দাগ দূর হবে।
- এছাড়া রোদের তাপেও ঠোট রুক্ষ হয়ে যায়। তাই এ সময় ঠোঁট নিয়মিত ময়শ্চারাইজিং করা জরুরী। দিনের মধ্যে কয়েকবার ঠোঁটে ময়েশ্চারাইজার লোশন লাগান।
- লিপস্টিক লাগানোর আগে ঠোঁটে একটু লোশন বা ক্রিম লাগিয়ে নিন। এতে ঠোঁট সহজে শুকিয়ে যাবে না।
- আর অবশ্যই ঠোঁটে ভালো ব্র্যান্ডের লিপস্টিক লাগান। অনেক দিনের পুরনো লিপিস্টিক ব্যবহার না করাই ভালো।
- যাদের ঠোঁটফাটা সমস্যা তারা একটা ছোট বোতলে গোলাপ জল ও গ্লিসারিন নিচে ফ্রিজে রেখে দিন। প্রতি রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ওটা ঠোঁটে লাগান। এতে ঠোঁট তো ফাটবেই না, ঠোঁটের ত্বক নরম ও কোমল হবে।
- ঠোঁটের গোলাপি আভা বজায় রাখতে নিয়মিত কাঁচা দুধ বা দই লাগাতে পারেন।
- হাত দিয়ে ঘষে ঠোঁট মুছবেন না। পরিষ্কার নরম কাপড় বা টিস্যু পেপার দিয়ে ঠোঁট মুছুন।
- আর গরমের দিনে ঠোঁটে ম্যাট লিপস্টিক না লাগিয়ে গ্লসি ও লিপ গ্লোস লাগালে ঠোঁটের আদ্রতা বজায় থাকবে।
গরমে সতেজ ও সুরভিত থাকতে
ভ্যাপসা এই গরমে নিজেকে সতেজ ও পরিচ্ছন্ন রাখাটা বেশ কঠিন। কারণ বাইরে বের হলেই রোদের তাপ, ধুলো, ময়লা, ঘাম, দুর্গন্ধ ইত্যাদি থেকে রেহাই নেই। তাই বলে তো আর অপরিচ্ছন্ন থাকা যায় না। বরং এসবের মধ্যেও কিভাবে নিজেকে পরিচ্ছন্ন পরিপাটি ও সুরভিত রাখা যায় এ বিষয়ে আমাদের সচেতন হওয়া উচিত। কারণ ঘামের গন্ধ বা যেকোনো দুর্গন্ধ একটা অপ্রীতিকর ব্যাপার।
তাই বলে তো ঘাম বন্ধ করে রাখা যাবেনা বা সেটা উচিতও নয়। কারণ ঘাম আমাদের শরীরের দূষিত পদার্থ বের করে দেয় এবংশরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখে। তাছাড়া ঘামের নিজস্ব কোন গন্ধ নেই। মানুষের শরীরে নিজস্ব গন্ধ এবং পারিপার্শ্বিক গন্ধ এই ঘামের মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়। লোমকূপের মাধ্যমেই আলাদা ভাবে ঘামও তেল নিঃসরণ হয়।
আরও পড়ুনঃ শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির উপায়।
আর এই দুটো মিশে যায় বলেই শুকাতে অপেক্ষাকৃত বেশি সময় লাগে। বিশেষ করে আন্ডার আর্মস এর মত জায়গাগুলোয় ঘামিয়ে ভেজা থাকে এবং দুর্গন্ধ ছড়ায়। ঘামের এই অস্বস্তিকর দুর্গন্ধ এড়িয়ে কিভাবে নিজেকে সুরভিতও সতেজ রাখবেন এই বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন রূপ বিশেষজ্ঞ শারমিন কচি। চলুন জেনে নিইঃ
- গরমের দিনে অন্তত দুইবার গোসল করার অভ্যাস করুন। সকালে বের হওয়ার আগে একবার এবং সন্ধ্যায় ফেরার পর। খুব বেশি ঠান্ডা লাগার ধাত থাকলে রাতে চুল না ভিজিয়ে গোসল করুন।
- গরমের সময় অবশ্যই সুতি কাপড় ব্যবহার করতে চেষ্টা করবেন। আর ঘামে ভেজা কাপড় রোদে বা বাতাসে শুকিয়ে ব্যবহার করবেন না। সম্ভব হলে প্রতিদিনই কাঁচা কাপড় ব্যবহার করুন।
- নিজে পরিচ্ছন্ন থাকার চেষ্টা করুন। ব্যক্তিগত পোশাক এবং তোয়ালে পরিষ্কার রাখুন।
- গোসলের পর শরীরটা শুকিয়ে নিয়ে ডিওডোরেন্ট লাগান। বাইরে যাওয়ার আগে তো অবশ্যই।
- বাইরে যাওয়ার সময় রুমালের বদলে সুগন্ধি ভেজা টিস্যু ব্যবহার করুন। এতে ঘামও মোছা যাবে, সুগন্ধও ছড়াবে।
- পেট পরিষ্কার রাখুন। বেশি করে পানি ও সবুজ শাকসবজি খেতে চেষ্টা করুন।
আরো কিছু ঘরোয়া টিপস
- গোসলের পানিতে কিছু গোলাপের পাপড়ি ও কয়েক টুকরো গন্ধরাজ লেবু দিয়ে কিছুক্ষণ পর সেই পানি দিয়ে গোসল করুন।
- ২ টেবিল চামচ লেবুর খোসা বাটা 2 কাপ পানিতে ফুটিয়ে ঠান্ডা করে ফ্রিজে রেখে দিন। প্রতিদিন গোসলের আগে ওই মিশ্রণটি সারা গায়ে মেখে তারপর গোসল করুন। এতে ঘামের গন্ধ তো দূর হবেই সতেজ ভাবটাও চলে আসবে।
- গোসলের পানিতে গোলাপ জল ও লেবুর রস মিশিয়ে নিন। গোসলের পর দেখবেন কেমন ফুরফুরে ভাব চলে আসবে।
- অল্প পানিতে কর্পূর গুড়া করে মিশিয়ে সেটা গায়ে মাখন। 15 থেকে 20 মিনিট পর গোসল করুন।
- রোদে ঘুরে অনেকের ঘামাচি হয়। একমগ পানিতে এক চা চামচ বরিক পাউডার মিশিয়ে গোসলের পর সারা গায়ে ঢেলে তারপর আলতো করে শরীর মুছে নিন। ঘামাচি কমে যাবে।
এ গরমে ঘামের দুর্গন্ধ এড়াতে ঝটপট বডি স্পা
স্পা শব্দটা আধুনিক লাইফ স্টাইলে এখন পরিচিত শব্দ। তবে সব সময় বিউটি সেলুনে গিয়ে স্পা করানো যেমন সময়ের ব্যাপার তেমনি খরচের দিকটাও সামলানো যায় না। আবার এই গরম, ঘাম, বৃষ্টি, কাদা, পানিতে স্পা করাটা জরুরিও। কাজেই ছুটির দিনে একটু সময় করে ঘরে বসে নিজেই করে নিতে পারেন বডি স্পা। এই গরমে ঘামের দুর্গন্ধ এবং
রাস্তায় বের হলে ধুলো দূষণের মধ্যে ফ্রেশ থাকা খুব সহজ কাজ নয়। এছাড়াও আমাদের আধুনিক জীবন যাপনে মেন্টাল স্ট্রেসটাও খুব বেশি। আর এসব ঝামেলার মধ্যে শারীরিক এবং মানসিকভাবে খানিকটা ফ্রেশ রাখতে পারে স্পা। তাই ঘরে বসে ছুটির দিনে আপনি নিজেই ঝটপট করে নিতে পারেন স্পা। এর জন্য আপনার লাগবে কিছু উপকরণ এবং ভিন্ন একটা পরিবেশ।
কিভাবে করবেন পরামর্শ দিয়েছেন রূপ বিশেষজ্ঞ শারমিন কচি।
স্পার জন্য যা লাগবে
আপনার পছন্দের সাবান বা লিকুইড সোপ, এসেনশিয়াল অয়েল, স্ক্রাব ও ম্যাসেজ ক্রিম, তোয়ালে, সুগন্ধী বাতি, গোলাপের পাপড়ি ও এক বোতল গোলাপজল। যেভাবে করবেনঃ বড় বালতিতে গোসলের জন্য কুসুম গরম পানি নিন। এবার ওই পানিতে গোলাপ জল, গোলাপের পাপড়ি ও অ্যাসেনশিয়াল ওয়েল মিশিয়ে নিন। তারপর একটি টুলে বসুন।
প্রথমে মেসেজ ক্রিম দিয়ে সারা শরীর যতটুকু সম্ভব মেসেজ করুন। এভাবে কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে চুপচাপ বসে থাকুন। এতে রিলাক্স হবে। এরপর বডি স্ক্রাব দিয়ে সারা শরীর স্ক্রাব করুন। বিশেষ করে হাঁটু, কনুই ও পায়ের আঙ্গুল। এরপর ১৫ মিনিট একইভাবে রিলাক্স করুন। স্ক্রাব শুকাতে থাকলে আগে তৈরি করে রাখা পানি শরীরে ঢালুন।
লোফায় সাবান মেখে সারা শরীর সার্কুলার মুভমেইন্টে ঘশুন। পিঠ ঘষার জন্য লম্বা হাতলের ব্রাশ ব্যবহার করুন এরপর ভালো করে গোসল করে ফেলুন। গোসল শেষ করে একটু ময়শ্চারাইজার মেখে নিন। মনে রাখুন স্পা করার জন্য অবসর সময়টা বেছে নিন। হাতের কাজ শেষ করে নেয়া ভালো ।কারণ কাজের কথা মনে পড়লে রিলাক্স হতে পারবেন না।
পরিবারের অন্যদের জানিয়ে নিন ওই সময়টুকু আপনি ব্যস্ত থাকবেন। যেন ডাকা ডাকি না করে। কারণ ওই সময়টুকু আপনার।
লেখকের মন্তব্য
সবশেষে বলা যায় যে,গরমে দৈনন্দিন জীবন সংগ্রামে এবং মানসিক চাপে আপনার ত্বক যখন রুক্ষ ও প্রাণহীন হয়ে পড়ে তখন নিয়মিত প্রয়োজন আপনার ত্বকের যত্ন। গরমে নিয়মিত ত্বকের যত্ন না নিলে আপনার ত্বক রুক্ষ ও প্রাণহীন হয়ে পড়বে। গরমে ত্বকের নানা সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজন ত্বকের বিভিন্ন ধরনের পরিচর্যা।
তাই বিভিন্ন উপায়এ ত্বক পরিচর্যায় অল্প দিনে ফিরে পাবেন হারানো সৌন্দর্য। নিয়মিত পরিচর্যায় ত্বক সতেজ ও সুন্দর রাখা সম্ভব। নিয়মিত ত্বক পরিচর্যার পাশাপাশি অবশ্যই নিয়মিত সবুজ শাকসবজি এবং প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। পরিচর্যার পাশাপাশি ভিটামিন সমৃদ্ধ সবজি খেলেও ত্বক সজিব থাকবে। এই গরমে অনেক বেশি বেশি পানি পান করতে হবে।
তবেই আপনার স্বাস্থ্য ভালো থাকবে এবং ত্বকও সুন্দর থাকবে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url