বিশ্বজুড়ে বিস্তৃত আধুনিক ইন্টারনেট ও তার ব্যবহারের ফলাফল
বিশ্বজুড়ে বিস্তৃত আধুনিক ইন্টারনেট ও তার ব্যবহারের ফলাফল প্রিয় পাঠক আপনি কি বিশ্বজুড়ে বিস্তৃত আধুনিক ইন্টারনেট ও তার ব্যবহারের ফলাফল সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আমারে আর্টিকেলে বিশ্ব জুড়ে বিস্তৃত আধুনিক ইন্টারনেট ও তার ব্যবহারের ফলাফল, ইন্টারনেট কি, ইন্টারনেটে কুফল, ইন্টারনেটের সুফল প্রভৃতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। তাই আর্টিকেলটি না টেনে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন। আশা করি বিশ্বজুড়ে বিস্তৃত আধুনিক ইন্টারনেট ও তার ব্যবহারের ফলাফল সম্পর্কিত এই আর্টিকেলটি থেকে আপনি উপকৃত হবেন।
পোস্টসূচিপত্রঃবর্তমান বিশ্বে ইন্টারনেটের ব্যবহার এখন ব্যাপক হারে বেড়েছে। মানুষের চলার সকল ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ব্যবহার এখন ব্যাপক হারে বেড়েছে। তাই আমার এই আর্টিকেলে বিশ্বজুড়ে বিস্তৃত আধুনিক ইন্টারনেট ও তার ব্যবহারের ফলাফল সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
ভূমিকা
বর্তমানে ইন্টারনেটকে বিশ্বগ্রামের মেরুদন্ড হিসেবে অভিহিত করা হয়। কেননা ইন্টারনেটের মাধ্যমে আজ পৃথিবীর সকল মানুষ এক অদৃশ্য জালের মত নেটওয়ার্ক দ্বারা সংযুক্ত হয়ে শারীরিকভাবে যেকোনো দূরত্বে অবস্থান করেও ভার্চুয়ালি পরস্পরে সর্বাধিক কাছাকাছি থাকার সুবিধা উপভোগ করছে। বিশ্বজুড়ে বিস্তৃত আধুনিক ইন্টারনেট এখন আর টেলিফোন লাইন নির্ভর নয়।
সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে বিস্তৃত অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্ক মাইক্রোওয়েভ ও স্যাটেলাইট কমিউনিকেশন এর মাধ্যমে ইন্টারনেটের বিস্তৃত সক্ষমতা ও সম্ভাবনা এখন প্রায় অসীম। বিশ্বজুড়ে বিস্তৃত আধুনিক ইন্টারনেট এখন বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বেই ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ইন্টারনেট ওয়ার্ল্ড স্টেটস এর তথ্য অনুসারে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সারা পৃথিবীর প্রায় চার বিলিয়নেরও অধিক মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে যা পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার শতকরা প্রায় ৫০ ভাগ। ২০১৮ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত BTRC- এর হিসাব মতে বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী সংখ্যা ছিল ৮০ হাজার ২৮৯ মিলিয়ন।
এদের মধ্যে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যার সর্বাধিক ৭৫ হাজার ৩ ৯৬ মিলিয়ন। ১৯৬৯ সালে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে ARPANET(Advance Research Project Agency Network) নামক প্রজেক্টর এর মাধ্যমে ইন্টারনেটের পত্তন ঘটে।
আরপানেট পরবর্তীতে আশি দশকের প্রথম ভাগ পর্যন্ত বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সীমিতভাবে উন্মুক্ত ছিল। ১৯৮২ সালে বিভিন্ন কম্পিউটারের মধ্যে নেটওয়ার্ক সংযোগ স্থাপনে উপযোগী টিসিপি/আইপি(TCP/IP-Transmission Control/Internet Protocol) উদ্ভাবিত হলে প্রথম বিশ্বজুড়ে বিস্তৃত আধুনিক ইন্টারনেটের ধারণাটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
ইন্টারনেট বলতে কি বুঝায়?
ইন্টারনেট শব্দটি এসেছে International Network থেকে। ইন্টারনেট মানে হল আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক বা নেটওয়ার্কের নেটওয়ার্ক। ইন্টারনেটকে সংক্ষেপে নেট (Wet) এবং বাংলার অন্তরজাল বলা হয়। ইন্টারনেটের মাধ্যমে কেউ বিশ্বের অন্য প্রান্তের কম্পিউটারের সাথে যোগাযোগ করতে পারে এবং তথ্য আহরণ করে নিজের কম্পিউটারে নিয়ে আসতে পারে।
ইন্টারনেট হল বিশ্বজুড়ে বিস্তৃত অসংখ্য নেটওয়ার্কের সমন্বয়ে গঠিত একটি বৃহত্তর নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা। এক কথায় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অনেকগুলো নেটওয়ার্কের সমন্বিত ব্যবস্থায় ইন্টারনেট।
ইন্টারনেটে সংযুক্ত কম্পিউটার গুলো যে সকল কাজ করে থাকে
ইন্টারনেটে সংযুক্ত কম্পিউটার গুলোর কাজ হলো একে অন্যের মধ্যে তথ্য আদান প্রদান করা। এ কারণে বর্তমানে আদান-প্রদানের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল কাজেই ইন্টারনেটের সুবিধা ব্যবহার হয়ে থাকে। যেমন চিঠি আদান-প্রদানের জন্য ইন্টারনেট নির্ভর ব্যবস্থা হিসেবে আবিষ্কৃত হয়েছে ইন্টারনেট, টেলিফোনে কথা বলা কে ইন্টারনেটের সাহায্যে
আধুনিক করতে এসেছে টেলিকনফারেন্সিং বা ভিডিও কনফারেন্সিং ইত্যাদি। ইন্টারনেটের উপাদান হল এর ব্যবহারকারী, তথ্য, টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা, কম্পিউটার প্রভৃতি। বিশ্ব বিস্তৃত আধুনিক ইন্টারনেটের ব্যবহারকে আরো উন্নত মানের করতে নিয়ে এসেছে ই-মেইল, টেলিকনফারেন্সিং, ভিডিও-কনফারেন্সিং ও বুলেটিন বোর্ড নিম্নে এগুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ
ই-মেইল (EMAIL): তথ্য আদান-প্রদানের আইপি বা ইন্টারনেট প্রোটকল ব্যবহার করে থাকে এবং এতে টেক্সট বার্তার সাথে এটাচমেন্ট আকারে নানা ফাইলো( ডকুমেন্ট, ছবি, অডিও, ভিডিও সহ যে কোন ডিজিটাল ফাইল) পাঠানো যায়। পত্র যোগাযোগের জন্য যেমন একটি নির্দিষ্ট ঠিকানা প্রয়োজন তেমনি ইমেইলের জন্য ই-মেইল এড্রেস ব্যবহৃত হয়,
যা প্রত্যেক ব্যবহারকারীর জন্য ইউনিক হয়ে থাকে। নিরাপত্তার জন্য গোপন পাসওয়ার্ড দ্বারা সুরক্ষিত রাখা হয় প্রত্যেকের ই-মেইল একাউন্ট কে। একটি ই-মেইল এড্রেস এ দুটি অংশ থাকে, যার প্রথম অংশটি ব্যবহারকারীর পরিচিতি এবং শেষ অংশটি ডোমেন নেম হিসেবে পরিচিত যেমন- brahman-sys@gmail.com একটি ই-মেইল
এড্রেস যার brahman-sys অংশটি ব্যবহারকারীর পরিচিতি এবং gmail.com অংশটি ডোমেইন নেম হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। একটি ইমেইল বার্তা তিনটি অংশ নিয়ে গঠিত তা হলঃ
- বার্তার খাম বা মোড়ক।
- বার্তার হেডার বা মূল যেটিতে বার্তা কোথায় এবং কার কাছ থেকে এসেছে সেই তথ্য থাকে এবং
- মূল বার্তা।
টেলিকনফারেন্সিংঃ বিশ্বজুড়ে বিস্তৃত আধুনিক ইন্টারনেটের মাধ্যমে টেলিকনফারেন্স এর মাধ্যমে একই স্থানে না এসে ভিন্ন ভিন্ন স্থানের একদল লোক সভায় মিলিত হয়ে কার্যবিবরণী, মতামত ও রিপোর্ট পেশ করতে এবং সিদ্ধান্ত নিতে পারে। কয়েকজনের একটি ছোট দল অথবা অনেক বড় দল এ সভায় মিলিত হতে পারে।
এর ফলে সময় ও অর্থ উভয়ই সাশ্রয় হয়ে থাকে। টেলিকনফারেন্স কম্পিউটারাইজড কনফারেন্স অথবা সিসি নামে পরিচিত। ১৯৭৫ সালে মরি টারফ এ পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন।
ভিডিও কনফারেন্সিংঃ ভিডিও কনফারেন্সিং হল ইন্টারনেট নির্ভর একটি অত্যাধুনিক টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা। বর্তমানে ভিডিও কনফারেন্সিং ব্যবসা-বাণিজ্য ছাড়াও শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। যোগাযোগের ক্ষেত্রে এটি একটি অতি আধুনিক দ্রুততম এবং কার্যকর প্রযুক্তি হিসেবে বর্তমান বিশ্বে অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
ভিডিও কনফারেন্সিং এর জন্য যে প্রধান ইন্টারনেট কানেকশন এর প্রয়োজন তার নিম্নে উল্লেখ করা হলো-
- skype(স্কাইপি): এটি ফ্রী ভয়েস ওভার ইন্টারনেট সফটওয়্যার মেসেঞ্জার সফটওয়্যারটির মাধ্যমে ব্যবহার কারিগর নিজেদের মধ্যে অডিও-ভিডিও চ্যাটিং সুবিধা পাশাপাশি কম্পিউটার থেকে কম্পিউটারে বিনামূল্যে এবং কম্পিউটার থেকে প্রচলিত টেলিফোনে স্বল্পমূল্যে বিশ্বব্যাপী কথা বলতে পারে।
- viber(ভাইবার): ভাইবার হল জাপানিজ কম্পানি কর্তৃক অপারেটকৃত একটি তাৎক্ষণিক বার্তা প্রেরক এবং ভিডিও আইপি অ্যাপ। ভাইবার এর ব্যবহারকারীকে বিনামূল্যে কথা বলা, এসএমএস, আদান-প্রদান, ছবি বা ভিডিও আদান-প্রদান, ভিডিও কলিং, গ্রুপ মেসেজিং, লোকেশন শেয়ার প্রভৃতি সুবিধা প্রদান করে।
- WhatsApp (হোয়াটসঅ্যাপ): হোয়াটসঅ্যাপ স্মার্ট ফোনের জন্য জনপ্রিয় একটি মেসেঞ্জার। হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে চ্যাট সহ ছবি আদান-প্রদান, ভিডিও ও অডিও মিডিয়া বার্তা আদান-প্রদান, ভিডিও অডিও কলিং প্রভৃতি করা যায়। মেসেঞ্জারটি আই ও এস, ব্ল্যাকবেরি, অ্যান্ড্রয়েড, সিমবিয়ান ও উইন্ডোজ ফোনে ব্যবহার করা যায়।
- Facebook Messenger(ফেসবুক মেসেঞ্জার): ফেসবুক মেসেঞ্জার হল একটি জনপ্রিয় মেসেঞ্জার এবং প্ল্যাটফর্ম যা প্রথমে ফেসবুকে চ্যাট করার জন্য ২০০৮ সালে চালু করা হয়। পরবর্তীতে এটি পৃথকভাবে একটি মেসেজ হিসেবে ২০১০ সালে নতুন আঙ্গিকে রিলিজ করা হয়। বর্তমানে এটি বিশ্বের উন্নত একটি জনপ্রিয় বিও আইপি সফটওয়্যার যার মাধ্যমে ইউজারগণ বিশ্বব্যাপী ফ্রী মেসেজিং, অডিও ভিডিও কলিং ও চ্যাটিং প্রভৃতি করতে সক্ষম হয়।
বোর্ডের সঙ্গে সংযোগের স্থাপন করে এতে প্রদর্শিত বিভিন্ন সংবাদ সংগ্রহ করা যায়। এজন্য কম্পিউটারকে টেলিফোন লাইনের সঙ্গে সংযুক্ত করে সার্বক্ষণিকভাবে সচল রাখা প্রয়োজন। বুলেটিন বোর্ড পরিচালনায় বিশেষ সফটওয়্যার প্রয়োজন যা অন্যান্য কম্পিউটার থেকে আসা কলেজ জবাব প্রদান, অন্যান্য কম্পিউটার কর্তৃক প্রদত্ত সংবাদ সংগ্রহ ও সংরক্ষণ
এবং ব্যবহারকারীদের জন্য বুলেটিন বোর্ডের ফাইলপত্র ব্যবহারের সুযোগ করে দেয়। বর্তমানে বিভিন্ন ওয়েব পেজের জন্য ব্যবহৃত WWW(world wide web) হচ্ছে ইন্টারনেটের বলেটিং বোর্ড যা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ওয়েবপেজ গুলোকে সংরক্ষণ ও প্রদর্শন করে থাকে।
আরও পড়ুনঃ সমস্যা ভিত্তিক শিক্ষা কেন গুরুত্বপূর্ন।
ইন্টারনেটের বিনোদন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার
বিশ্বজুড়ে বিস্তৃত ইন্টারনেট ও তার ব্যবহার বর্তমান বিশ্বে বিনোদন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ব্যাপকভাবে বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত হয়েছে নিম্নে এগুলো আলোচনা করা হলো
বিনোদনঃ বর্তমান ইন্টারনেটের যুগে বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে অনলাইন গেমিং অন্যতম জনপ্রিয় একটি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আজকাল ইন্টারনেটের টিভি ও রেডিও চালু হওয়ায় স্ট্রিমিং অডিও ভিডিও প্রযুক্তির মাধ্যমে দূরদূরান্তে বসেও টিভি ছাড়াই কম্পিউটার টিভি দেখা যায়। বিভিন্ন সামাজিক নেটওয়ার্কিং সাইট যেমন-ফেসবুক, ডিগ,
ইউটিউব, ফ্লিকার ইত্যাদি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের জনগোষ্ঠীকে পরস্পরের কাছাকাছি নিয়ে এসেছে ।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমঃ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বলতে এমন এক ধরনের অনলাইন প্লাটফর্মকে বোঝানো হয় যার মাধ্যমে এক ব্যক্তি অপর ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের সাথে সামাজিক সম্পর্ক তৈরি করতে পারে এবং নিজের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক সহ যেকোনো ধরনের মতামত, আইডিয়া, কার্যকলাপ প্রভৃতি
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে শেয়ার তথা বিনিময়, আলোচনা, বিতর্ক প্রভৃতি চালাতে পারে। নিচে কয়েকটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সম্পর্কে আলোচনা করা হলঃ
- ফেসবুকঃ জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের যাত্রা শুরু হয় ২০০৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে। এর জনক মূল উদ্যোক্তা হলেন মার্ক জাকারবার্গ। ফেসবুকে ফ্রি মেম্বার হয়ে এর মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন পরিচিত বা অপরিচিত ব্যক্তির সাথে বন্ধুত্বকরণ, ইচ্ছেমতো দিনরাত যে কোন সময় নিজের স্ট্যাটাস আপডেট করা, ব্যক্তিগত বন্ধুদের সাথে মেসেজ আদান-প্রদান ও চ্যাটিং করা যায়। ইচ্ছেমতো নিজের ছবি, ভিডিও, নেটওয়ার্ক, অবস্থান প্রভৃতি সবকিছুই ফেসবুকের মাধ্যমে শেয়ার করা সম্ভব। সামাজিক যোগাযোগের জন্য ডেভেল প্রকৃত এই ভাইরাল মাধ্যমটির সমাজের ওপর ইতিবাচক ও নেতিবাচক উভয় ধরনের প্রভাবে পরিলক্ষিত হয়।
- ইউটিউবঃ ইউটিউব হল একটি জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং ওয়েবসাইট। এই সাইটটি প্রথম উদ্যোক্তাদের একজন বাংলাদেশী বংশদ্ভুত জার্মানি নাগরিক জাওয়াদ করিম। এর অপর দুজন উদ্যোক্তা এবং ডেভলপার হলেন চ্যাড হারলি ও স্টিভ চ্যান। ইউটিউবে অব্যাহত জনপ্রিয়তার বৃদ্ধি দেখে এক পর্যায়ে এই ওয়েবসাইটটি গুগোল কিনে নেয়। বর্তমানে এটি গুগলের ওয়েবসাইট হিসেবে একটি স্বীকৃতি ভিডিও শেয়ারিং সামাজিক মাধ্যম।
- টুইটারঃ ফেসবুকের মতোই জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হলো টুইটার।। পশ্চিমা দেশগুলোতে এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি সর্বাধিক জনপ্রিয়। জ্যাক জোরসে, নোয়া গ্লাস, ইভান উইলিয়ামস এবং বীজ স্টোন এর উদ্যোক্তা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সুফল
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু সুফল নিম্নে আলোচনা করা হলো-
- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাহায্যে মানুষ সর্বদা নিজের পরিচিত জন, বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়-স্বজন সহ বিশ্বের যে কোন স্থানে থাকা যে কোন মানুষের সাথে সংযুক্ত থাকতে সক্ষম হয়। নিজের সুখ দুঃখ সমবেদনা মানুষের সাথে ভিজুয়ালি শেয়ার করার মাধ্যমে এক ধরনের মানসিক সন্তুষ্টি অর্জনে সামাজিক যোগাযোগ একটি অতুলনীয় মাধ্যম।
- বাণিজ্যিক বিপণন ও প্রসারের ক্ষেত্রে এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম একটি অপরিহার্য হাতিয়ার হিসেবে সমাদ্রিত।
- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অবিশ্বাস্য দ্রুতগতিতে ভাইরাল উপায়ে যেকোন তথ্যকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে সক্ষম।
- যেকোনো সামাজিক, পারিবারিক অপরাধ ও অপরাধী কে সনাক্তকরণ, প্রতিরোধ, প্রতিবাদ, জনসচেতনতা ও জনম তৈরিতে বিশ্বব্যাপী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভূমিকা এখন ব্যাপকভাবে সমাদৃত।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কুফল
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কিছু কুফল সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-
- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসক্তিকে ডিজিটাল কোকেন হিসেবে অভিহিত করা হয়ে থাকে। বর্তমানে এটি মানুষের কর্মজীবনে ব্যাপক সময়ের অপচয়, দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য ঝুঁকি, শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ক্ষতি প্রভৃতি সমস্যা সৃষ্টি করছে।
- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল ইফেক্ট এর কারণে যেকোনো অসত্য তথ্য বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়তে পারে। এর ফলে যে কোন মিথ্যা বা ভিত্তিহীন তথ্য অনেক সময় প্রতিষ্ঠিত হয়ে সমাজ ও রাষ্ট্রে ভয়াবহ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অনেক সময় অতিরিক্ত ব্যক্তিগত বিষয় দ্রুত ছড়িয়ে ফেলে মানুষের পারিবারিক সম্পর্ক, সামাজিক শালীনতা, গোপনীয়তা প্রভৃতি ক্ষেত্রে ব্যাপক হুমকির সৃষ্টি করে।
- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে কম্পিউটার অপরাধ ও সাইবার সন্ত্রাস দ্রুতগতিতে বিস্তার লাভ করে। অনেক সময় এর কুপ্রভাব রাষ্ট্রীয় ও বিশ্ব পর্যায়ে সুদূরপ্রসারী হয়ে পড়ে।
ইন্টারনেটের কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ সুবিধা
বিশ্বজুড়ে বিস্তৃত আধুনিক ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে পুরো বিষয় ইন্টারনেট নির্ভর হয়ে উঠছে যার মাধ্যমে বিশ্বের সকল ক্ষেত্রেই বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায়, সেগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় নিম্নে দেওয়া হলো-
- ইন্টারনেট হল তথ্যের বিশাল ভান্ডার। ইন্টারনেটে যুক্ত হয়ে কাঙ্ক্ষিত তথ্যের নাম লিখে সার্চ করলে বিশ্বের অসংখ্য সার্ভারে থাকা তথ্যগুলো প্রদর্শিত হয়।
- ইন্টারনেটের মাধ্যমে মুহূর্তেই বিশ্বের যে কোন প্রান্তে ই-মেইল করে তথ্য আদান প্রদান করা যায়।
- ইন্টারনেটের মাধ্যমে ফ্যাক্স সুবিধা পাওয়া যায়।
- VoIP এর মাধ্যমে প্রচলিত ফোনের চেয়ে খুব কম খরচে বিশ্বের যে কোন প্রান্তে কথা বলা যায়।
- ইন্টারনেট লের অনুষ্ঠান উপভোগ করা যায়।
- বিভিন্ন ধরনেটিভি ও ইন্টারনেট রেডিও চালুর ফলে ঘরে বসে কম্পিউটারে বিভিন্ন ধরনের টেলিভিশন ও রেডিও চ্যানের সফটওয়্যার, ফ্রী ওয়্যার, বিনোদন উপকরণ ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করে সংগ্রহ করা যায়।
- সংবাদপত্র ও পত্রপত্রিকার ইন্টারনেট সংস্করণ প্রকাশিত হবার ফলে এখন ঘরে বসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পত্র পত্রিকা পড়া যায়।
- ই-কমার্সের সাহায্যে ঘরে বসেই পণ্য বেচাকেনা করা যায়।
- ঘরে বসে বিশ্বের নামকরা প্রতিষ্ঠান গুলোর শিক্ষা গ্রহণ করা যায়।
- ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার, গুগল টক, স্কাইপি ইত্যাদি ইনস্ট্যান্ট মেসেঞ্জার এর মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে বিশ্বের যে কোন প্রান্তে থাকা যে কোন ব্যক্তির সাথে টেক্সট ও ভিডিও শেয়ার করা যায়।
- অনলাইনে চিকিৎসা সেবা নেয়া যায়।
- গুগল ম্যাপসের মাধ্যমে বিশেষ যেকোন স্থানে স্যাটেলাইট মানচিত্র দেখে ওই স্থান সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যায়।
ইন্টারনেটের সুফল
নিম্নে ইন্টারনেটের কিছু সুফল গুলো দেওয়া হল-
- শিক্ষার্থীরা ক্লাসে উপস্থিত হতে না পারলেও ইন্টারনেটের মাধ্যমে তাদের পাঠ্যক্রমের বিষয়ে নানা সহযোগিতা পেতে পারে। ইন্টারনেট থেকে শিক্ষামূলক বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণা ও ব্যাখ্যা মূলক তথ্য আহরণ ও তাদের ফলাফল উন্নয়নে সহায়ক হতে পারে।
- ইন্টারনেট চাকরিজীবীদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, অধিক উপার্জন, সময় সাশ্রয়ী, প্রভৃতি সুফল প্রদান করে।
- ব্যবসায় ইন্টারনেটের ব্যবহার বাণিজ্যিক বিপণন, সরবরাহ, প্রচার প্রভৃতি বিষয়কে সাশ্রয়ী ও গতিশীল করে তোলে।
- বর্তমানে যেকোনো দেশের অর্থনীতিকে গতিশীল করতে ইন্টারনেটের ব্যবহার অপরিহার্য।
ইন্টারনেটের কুফল
বিশ্বজুড়ে বিস্তৃত ইন্টারনেট ব্যবহারে যেমন সুফল রয়েছে তেমনি কুফল রয়েছে নিম্নে এগুলো তুলে ধরা হলো-
- ইন্টারনেটে অনলাইন গেমস, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে মাত্রাহীন আড্ডা, কুরুচিপূর্ণ বিষয়ের চর্চা প্রভৃতি বিষয়গুলো শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার মনোযোগ ও সময় নষ্ট করে বলে তাদের ফলাফলে বিপর্যয় ঘটাতে পারে।
- অনলাইনে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে পণ্য বা সেবার মান সর্বদা সুনিশ্চিত করা সম্ভব হয় না। হলে অনেক ক্ষেত্রে অর্থের অপচয় বা ক্ষতি স্বীকার হওয়া সম্ভব না থাকে।
- ইন্টারনেটের মাধ্যমে কম্পিউটারে হ্যাকিং, ভাইরাস বা মেলওয়ার সংক্রমণ, স্প্যামিং আক্রমণের ঝুঁকি থাকে।
- দীর্ঘ সময় ইন্টারনেট ব্যবহারে ইন্টারনেট আসক্তির সৃষ্টি হয়। এর ফলে ব্যবহারকারী নানা ধরনের স্বাস্থ্য হারনে শিকার হয়ে থাকে এবং মানুষের পারিবারিক জীবনে সৃষ্টি হয়।
- ইন্টারনেটের মাধ্যমে যেকোনো সংবাদ খুব দ্রুত ভাইরাল আকারের ছড়িয়ে পড়তে পারে। এক্ষেত্রে কোন ভুয়া বা ভুল সংবাদ ভাইরাল হওয়ার ফলে তা সামাজিক অস্থিরতা, দাঙ্গা হাঙ্গামা, ব্যক্তিগত বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে।
লেখকের মন্তব্য
পরিশেষে বলা যায় যে, বিশ্বজুড়ে বিস্তৃত আধুনিক ইন্টারনেট ও তার ব্যবহার আমাদের জীবনকে অনেক সহজ দ্রুতগামী করে তোলে। আমাদের উচিত ইন্টারনেট এবং এর অন্যান্য ডিভাইসগুলিকে সঠিক সময় সঠিকভাবে সঠিক কাজের জন্য ব্যবহার করা এর ফলে আমরা প্রতিটি কার্যকলাপে সুফল নিয়ে আসতে পারবো।
অন্যান্য আধুনিক সুবিধা গুলো আমাদের জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন করতে উন্নতির দিকে লক্ষ্য করে এবং ভালো কাজে ব্যবহার করি।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url